
আমি ফেরত যেতে চাই (I want to go back)
ব্রিটিশ কাল এই বাংলা ছেড়ে চলে গেছে ঠিকই,কিন্তু বিকাল ও সন্ধ্যার মধ্যবর্তী সময়টা তে আজও তারা বাস করে। আমি জানিনা,এই সমস্যা শুধু আমার হয় না কি অন্য দেরও কিন্তু এই নির্দিষ্ট সময়টা কিছুটা western western মনে হয়। Western মানে হানগামা নাচানাচি typeএর নয়,এটা খুবই শান্ত ও মন খারাপ ধরনের। মনে হয় সেই সময়ের কষ্টগুলো এই বিশাল শহরের বিশাল দালান ধরে ধরে কাঁদছে আবার মনে হয় সেই সময়ের সুখগুলো আমাদের দিকে তাকিয়ে বলছে,”কি? পারলেনা তো ধরে রাখতে?”
যখন গ্রাম এলাকায় যাই,এই জিনিসটা বেশী অনুভূত হয়। ধানের চাতালের ঠান্ডা মাটিতে বিরহ বাস করে। স্যাঁতসেঁতে দেয়ালে যখন শেষ সূর্যটা তার ছাপ রেখে যেতে চায়,হুঁ হুঁ করে কাঁদতে থাকে দেয়াল বেয়ে চুইতে থাকা পানি। আর সেটা দেশের যে জায়গায় হোকনা কেন,একি সময়ে প্রতিটা দিন একি ধরনের পাখি ডাকে। আমি বলে বুঝাতে পারবোনা সেটা কেমন,ঠিক যেমন বলে বুঝাতে পারবোনা সেটা হাসি নাকি কান্না সুখ নাকি বিরহ।
আব্বুর বকাঝকার ফলশ্রুতি তে নৌকায় চড়া কম হয়েছে। তবুও,শেষ বিকালে একবার নৌকায় চড়েছিলাম। খুব বড় হইনি তখনো। দু’টো জিনিস আমার ইন্দ্রিয়জয় করছিলো। শান্ত বিকালে বৈঠার সাথে পানির যুদ্ধের আওয়াজ আর ততটাই শান্ত ভাবের নদীর পাড়ের মাটির গন্ধ। আর কোনো কথা ছিলোনা। আচ্ছা,এইটা কি সুখ ছিলো নাকি এই জমিনের হাজারটা দিনের চেপে রাখা কষ্টের অল্প রকম আভাস।
ছোটবেলার কথা মনে পড়ছে। যখন দাদী বাড়িতে যেতাম, বিশেষত ঈদে তখন ঠান্ডার সময় থাকতো। আঙিনায় এক পাশে হেঁসেল বা রান্নাঘর ছিলো। দাদী চিতাই বা ভাপাপিঠা বানাতেন। রান্নাঘরের উপরে লম্বা পাইপ দেয়া থাকতো। হ্যাঁ,এই ব্যাপারটা western. তো,সেই পাইপ দিয়ে ধোঁয়াগুলো কালচে হয়ে বের হয়ে যেত স্বাভাবিকভাবেই। অন্যরা সেই খোঁয়ার চোটে কাশিকে নিজের সংগী বানাতো ঠিকই,কিন্তু আমি তার মধ্যে এক ধরনের গন্ধ পেতাম। সেই ধোঁয়ায় একটা সুখ লাগতো,একটা নেশা লাগতো। মনে হতো,আমি প্রতিদিন সেই বিকাল-সন্ধ্যার মধ্যের সময়ে এই ধোঁয়া শুঁকতে থাকি নেশাখোরের মতো। আচ্ছা,এই কালো খোঁয়া কি আমাকে আসলেই সুখ দিয়েছিলো নাকি আমার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছিলো বিরহ ইন্দ্রিয়?
আর একটা অতীত স্মৃতিতে ডুবতে চাইছি। ঢাকায় যেখানে থাকি সেখানে,৭ তলায় আমার বসবাস। Ground floor এ এই ভবনের বাচ্চারা খেলতে থাকে,চিতকার করে। এই চিতকার যেন একেকটা time machine এর ভূমিকায় অবতার হয়। আমাকে আমার ছোটবেলাতে নিয়ে যায়। আমি অনেক আদরের ছিলাম। বাসার সীমারেখার বাইরে ছোটবেলায় খেলার সুযোগ কম হয়েছে। তবে,মাঝে মাঝে যখন কোনো আত্মীয়র বাসায় যেতাম তখন লাগামহীন ঘোড়া ছিলাম। এমনি একজনের বাসার সামনে মাঠ ধরনের ছিলো। আমি শুনেছি,চাঁপাই নবাবগঞ্জ এমন একটা জেলা যেখানে মেয়ের সংখ্যা বেশী। এই অপ্রমাণিত তথ্য আমার বিশ্বাস হয়েছে। I am brought up with girls. অনেক লাজুক ধরনের ছিলাম। কিন্তু,ঘুরে ফিরে বেশীর ভাগ খেলতে হতো ওই আপু বা X Y এর সাথেই। তো,এমনি এক বিকাল সন্ধ্যার মধ্যের সময় ছিলো। যাদের বাসায় গেছি,সেও মেয়ে। আমার আজও মনে আছে,তার লাল একটা ফ্রর্ক ছিলো পড়া ছিলো তার পেছনে মাজার উপরে দু’টো ফিতা ছিলো। ওই যে থাকে না,ফ্রর্কটা টাইট করার জন্য। তো,আমি লজ্জায় কাহিল। সে বারবার তার এলাকার খেলার বন্ধুদের সাথে আমাকে মেশানোর চেষ্টা করছে। এখন ভাবলে আমি বুঝি,কত টা বেকুব ছিলাম। অনেক কষ্টে খেলতে নামলাম ‘বরফ পানি’ নাম এর বিখ্যাত খেলা। আমার মনে আছে,সেই মেয়েটা দৌড়াচ্ছিলো। এতো জোরে দৌড়াচ্ছিলো যে তার ফ্রর্ক এর ফিতা দুইটা উড়ছিলো। ছোট ফিতা বলে বেশী উড়তে পারছিলোনা ঠিকই। কিন্তু,আমার চোখে তা লেগেছিলো। এই জিনিসটা আমার মধ্যে এক ধরনের মোহ সৃষ্টি করেছিলো। আমার পা আটকিয়ে গেছিলো। একই সাথে কানে আসছিলো ওই পাখির আওয়াজ আর সন্ধ্যে বেলার মখমল ধরনের অদ্ভুত গন্ধ। কেউ আমাকে মোহের মধ্যে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। আমার স্পষ্ট মনে আছে। আমি ঘাসের উপর পড়ে ছিলাম। আর সেই ঘাস আর মাটির ছোঁয়া আমাকে বাধ্য করছিলো আমি যেন তাদের সাথেই মিশে যায়,সেখানেই যেন শুয়ে থাকি। বিশ্বাস করুন,আমার উঠতে ইচ্ছা করেনি। আচ্ছা সেই লাল ফিতা আর এই বেনামি মোহ কি আমাকে সুখ খুঁজে পাওয়ার ঠিক নির্দেশনা দিয়েছিলো,নাকি এটি ছিলো বারবার পড়ে যাওয়া দু:খের বার্তা?
আমি স্থিরতা অনুভব করছি,বাইরে যতটা স্থিরতা ভেতরটা ঠিক ততটাই অস্থির। আমি ফেরত যেতে চাই,উত্তর খুঁজতে।