ঘৃণাই সত্যি (Only hatefulness is true)

ঘৃণাই সত্যি (Only hatefulness is true)

Rajiul Huda Dipto is a professional screenplay writer and working for years in the Bangladeshi TV industry. Besides that, he introduces himself as a photographer, whose photographs have been featured in various magazines and exhibitions all around the world. Not regularly, but he publishes his works in national dailies as well. Currently, he is working as a community writer in BuzzFeed and a contributor in Getty Images.

 

রক্ত পড়ুক নরম গালে,
জল ঘোলার জাল শব্দতে,
কাফন হোক কালো রঙ এর,
লাশ ছেড়ে দাও সৈকতে,

তোমার চোখের ভেজা পথে,
বৃষ্টি আজ মরীচিকা,
নিজের খোঁজে পড়তে গেছি,
ভাঙা আয়নার গল্পটা,

ইচ্ছেতেই পথ হারালো,
কম্পাসের দামী কাঁটা,
ঘড়ি বলছে সময় কোথায়,
হিসেব মেলেনি সব ক’টা,

কবির লাশ আজ খাতাতে,
বোবার ভেসে শহরগুলি,
চুল বাঁধেনি কোনো ঝুটি,
শুকনো রঙ মৃত তুলি,

এর পরেও যদি ভাসতে বলো ভালো,
ঘৃণাই সত্যি।

জানতে চাইনা তোমার মনের,
দরজা খোলার চাবি কোথায়,
তোমার বসত গড়িয়েছি,
আমার মনের জানালায়,

বন্ধ থাকুক খাতার মলাট,
পাপের অংক কোণঠাসায়,
উড়তে গিয়ে দূরবীনে চোখ,
নতুন জীবন কার নেশায়?

আর এই শুকনো পাতাতে,
বৃষ্টির নিচে ছাতাতে,
ছায়াগুলো পিছলে গেছে,
চুনের দেয়াল তাই কানপাতে,

আঁকড়ে ধরে বিশ্রী রাত,
সূর্যের আলোয় গোপন চাঁদ,
খাম বিহীন ওই ভেজা চিঠি,
লাল পোষ্ট বক্সে জায়গা পাক,

এর পরেও যদি বাসতে বলো ভালো,
ঘৃণায় সত্যি।

বাতলে দাও (Tell me)

বাতলে দাও (Tell me)

Rajiul Huda Dipto is a professional screenplay writer and working for years in the Bangladeshi TV industry. Besides that, he introduces himself as a photographer, whose photographs have been featured in various magazines and exhibitions all around the world. Not regularly, but he publishes his works in national dailies as well. Currently, he is working as a community writer in BuzzFeed and a contributor in Getty Images.

 

কতটা কাছে কতটা দূর আমার ভালো লাগা,
আমার কাছে তোমার নেই ঠিকানা,
দেখো নিজের আয়না ভেজা ছবি বারেংবার,
আমার কাছে তোমার নেই ঠিকানা,

খেয়ালি তাকিয়ে থাকে দুপুরের আশপাশ,
হারিয়েছে সে কিছু টান,
হারাতে চায়নি তবে মান,
সময়ে তাসের ঘরে চেয়েছি যে শ্বেত কাশ,
পেয়েছি যে শুধু নিজেকে,
খুঁজিনি তোমায় আবেগে,

কি করে চালাবো গুটি আমি এইবার,
বাতলে তো দাও,
কতটা কাছে কতটা দূর আমার ভালো লাগা,
আমার কাছে তোমার নেই ঠিকানা,
দেখো নিজের আয়না ভেজা ছবি বারেংবার,
আমার কাছে তোমার নেই ঠিকানা,

বালিশের নিচে চাপা শুকনো লাশের ঘ্রাণ,
লাশ নয় সেতো এ দেহের,
কষ্টে বেড়েছে শুধু সের,
ডুব দিয়ে হয়তোবা করেছো পূণ্য স্নান,
ছিঁড়েছো মনের ঘুড়ি তাই,
কিতাবে থাকিনি আমি হায়,

কি করে চালাবো গুটি আমি এইবার,
বাতলে তো দাও,
কতটা কাছে কতটা দূর আমার ভালো লাগা,
আমার কাছে তোমার নেই ঠিকানা,
দেখো নিজের আয়না ভেজা ছবি বারেংবার,
আমার কাছে তোমার নেই ঠিকানা।

খসখসে চিঠি (Rough Letter)

খসখসে চিঠি (Rough Letter)

Rajiul Huda Dipto is a professional screenplay writer and working for years in the Bangladeshi TV industry. Besides that, he introduces himself as a photographer, whose photographs have been featured in various magazines and exhibitions all around the world. Not regularly, but he publishes his works in national dailies as well. Currently, he is working as a community writer in BuzzFeed and a contributor in Getty Images.

 

প্রিয় শুভাসী,

কম্পিউটারের টিপ টিপ বা মোবাইলের ট্যাপ ট্যাপ শব্দের চেয়ে আখের ছোবড়া দিয়ে বানানো কাগজের উপরে তিনটা দোকান ঘুরে বের করা, বাজেটের থেকে বেশী দাম দিয়ে কেনা Classic Ink Pen এর খসখস শব্দ আমার বেশী প্রিয়। তাই, তোমাকে চিঠি লিখি।
এই শহরে পোস্টবক্স দেখলে জনার্দনের চায়ের দোকানের কথা মনে পড়ে। আগে যে শহরে ছিলাম, সেখানে তার চায়ের দোকানের পাশেই পোস্টবক্স টা ছিলো কি না। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার আমি চা খেয়ে চিঠি ফেলে যেতাম। এখন এই শহরে কাওরানের উলটো দিকে একটা পোস্টবক্স দেখি। তার রঙ আমার স্মৃতির মতোই লাল। এখানে আসার পর সেই বক্সে প্রায় দুই সপ্তাহ চিঠি ফেলেছিলাম। তোমার কোনো উত্তর না পেয়ে, খোঁজ নিয়ে দেখলাম যে তোমার শহরে পোস্ট অফিস এখন শুধুমাত্র টাকা জমা রাখার স্থান। Post man আর তালে তালে চিঠিতে খ্যাটর খ্যাটর করে সিল মারেননা। তাই আর চিঠি পাঠাইনি। তবে, লিখা ছাড়িনি।

চলে আসার সময় দুটো ওয়াদা করেছিলাম, মনে আছে? এক তোমাকে ভোলা চলবে না আর দুই চিঠি লিখবো। লিখে যাচ্ছি। এই চিঠি তো তোমাকে পোস্ট করা হবে না। তাই, আমার অর্ধেক ভাঙা (আদতে কিছু টা বেশী) কাপড়ের ড্রয়ারের দুই নাম্বার পাল্লায় কোণার দিকে সব চিঠিপত্তর রেখে দিবো ঠিক তোমার দেয়া পচতে থাকা সানগ্লাসের বাক্সটার উপরে।
আচ্ছা, তোমাদের বাসার উলটো দিকের মসজিদে পাঁচ ওয়াক্তের আযান কি এখনো একি রকম সুরে বাজে? আযানের সময় হুজুর সাহেব কি এখনো নাকে বেশী টান দেন?

তোমার বাবা কি এখনো প্রতিদিন ছাদে বসে বসে মেহেদি তুলেন আর দাঁড়িতে লাগান?
উনি এখনো কি দুপুরে শিঙাড়া এনে খাওয়ান?
তোমার মা কি আর পায়েস রাঁধেন না?

ছাদে গিয়ে চুপ করে আমার সাথে ফোনে কথা বলার সময় পাশের বাড়ির ছোট্ট মেয়েটা তোমাকে দেখে আর আপু আপু বলে চিতকার দেয় না?
তোমার বাসার সামনে সাইকেল নিয়ে পায়চারি করা আট বছরের ছেলেটা কি এখনো তোমায় দেখে লজ্জা পায়?
মোড়ের বয়স্ক লোকটার দোকান থেকে কি আর রিচার্জের কার্ড নাওনা?
চুল কাটাতে পার্লারে যাও? নাকি অনেকদিন হয় না?

ফিজিক্স প্রফেসরের ওই গলিতে গোলাপি ব্যাগ নিয়ে স্যান্ডেল খসখস করে হাঁটতে হাঁটতে আর যাওনা না?
এখনো কি হাফ খাওয়া চকোলেট ফ্রিজে থেকে থেকে expired হয়ে যায়?
মশারি কি এখনো টাঙাও?

আর ফালুদা? শেষ বার কবে বানিয়েছো?
আমাকে কি মনে পড়ে?
এখনো ফোন দিতে ইচ্ছা করে?
করেনা না?

নাই করুক। ফোন দিয়ো না তো। আমি আমতা আমতা করবো, তুমি নোনতা নোনতা করবে। তার থেকে বরং আমাকে চিঠি লেখো। আর সেই চিঠি রেখে দিয়ো ওই ড্রয়ারের মধ্যে যেখানে পচছে আমার দেয়া আংটির বাক্সটা।
পোস্টবক্স নাহয় খালি থাকলো। খাম ভরুক স্মৃতি দিয়েই।

ইতি,
Ink pen এর কালি শেষ।

সন্ধ্যা পুরা দুপুরে (Noon before afternoon)

সন্ধ্যা পুরা দুপুরে (Noon before afternoon)

Rajiul Huda Dipto is a professional screenplay writer and working for years in the Bangladeshi TV industry. Besides that, he introduces himself as a photographer, whose photographs have been featured in various magazines and exhibitions all around the world. Not regularly, but he publishes his works in national dailies as well. Currently, he is working as a community writer in BuzzFeed and a contributor in Getty Images.

যদি হিসেব করতে বসি,
ভেজা শিশিরের ঘাসে,
কতগুলো দাঁড়ি লেগেছিলো ঠিক,
তোমার নামের পাশে,

তবে চোখ বন্ধের খেলায়,
চুম্বন উল্লাসে,
অনাদী সত্য লিখেছে গদ্য,
কাজলনয়ন পাশে,

ধ্যান ধমনীতে কিলবিল করে লেগেছে বাজ নূপুরে,
চশমার কাঁচ ভিজেছে হঠাত সন্ধ্যা পুরা দুপুরে।

বইয়ের পাতা কোনটা চেপেছে?
পালক নাকি পালকি?
চিঠির খামে তোমার নামটা,
পেয়েছিলে তুমি কাল কি?

বিরহের রঙ আজো লেগে আছে,
মেরুন পাঞ্জাবীতে,
কুয়াশার মাঝে মিশেছিলে তুমি,
ব্যথা লেগেছিলো শীতে,

বাতিঘর টা ফাঁকা থেকে গেলো, ডুবলো নাও পুকুরে
চশমার কাঁচ ভিজেছে হঠাত সন্ধ্যা পুরা দুপুরে।

সেই মর্চে লাগা ছাদের,
কোণায় জমা জলে,
তোমার লেখা চিঠির পাতায়,
বানানো নৌকা চলে,

আমার ভিজতে থাকা ছাতার,
নিচে আমি একা,
শেষ বাসটা হঠাত মৃত,
আর হবে না দেখা,

কাজল কান্না একসাথে আর আলাপ হোক খেজুরে,
চশমার কাঁচ ভিজেছে হঠাত সন্ধ্যা পুরা দুপুরে।

No Man’s Land থেকে (From the no man’s land)

No Man’s Land থেকে (From the no man’s land)

Rajiul Huda Dipto is a professional screenplay writer and working for years in the Bangladeshi TV industry. Besides that, he introduces himself as a photographer, whose photographs have been featured in various magazines and exhibitions all around the world. Not regularly, but he publishes his works in national dailies as well. Currently, he is working as a community writer in BuzzFeed and a contributor in Getty Images.

 

সেই সকালে ঘোড়ার গাড়ি তোমার বাড়ির সামনে,
কয়েক ধূতি কয়েক শাড়িতে ভর্তি ছিলো আগ্নে,
কিছুই বোঝার বাকি না থাক আমার চিন্তা আয়ুতে,
শেষবার টাই দেখেছি তোমায় হাত ভর্তি বালাতে,

মুলুক ভাগের নগ্ন খেলায়,
তোমার আমার বিচ্ছেদ,
চিঠি লিখবো কোন ঠিকানায়?
কোন ভাষায় দেবো সংকেত?

আমি এপার থেকে বলছি,
তুমি ওপার থেকে শুনছো,
আর মধ্যখানের No Man’s Land টা কাঁদছে,
তারাও কথা বলছে।

প্রেম করিনি রাজনীতির ওই বুক পকেটে লুকিয়ে,
কেনো তবে বিভেদ হবে তাদের বুঝকে মানিয়ে,
ভাগটা তবে ধর্মতে কি? মন্দির তুমি আমি মসজিদে?
ভেদহীন রক্ত ওমা একি? ভাগটা তবে কোন গণিতে?

দেশ ভাগটা করলে ঠিকই প্রেম ভাগটাও করে যাও,
ধর্ম ভাগে উপস থেকে মায়ের ভাগটা শুধরে নাও,

আমি এপার থেকে বলছি,
তুমি ওপার থেকে শুনছো,
আর মধ্যখানের No Man’s Land টা কাঁদছে,
তারাও কথা বলছে।

এখন আমি আমার মতো,
আর তুমি লুকোবে ক্ষত,
দেশ দুটো মধ্যখানে এসে দাঁড়িয়ে,
তুমি এদেশী আমি ওদেশী,
আর বিলুপ্ত জাত স্বদেশী,
তোমায় দেখতে হবে বন্দুকের নল পেরিয়ে,

তোমার শাড়ির আঁচল দিয়ে,
তাদের বন্দুক নল পেঁচাবো,
আমার শার্টের দু হাতাতে,
কাঁটাতার লাগাবো,
চলো সেই জাহানে যাবো,
যেখানে হিংস্র নই আমি তুমি,
রোজ এক খেয়াতে দাঁড়াবো,
আর একই থাকবে ভূমি,

আমি এপার থেকে বলছি,
তুমি ওপার থেকে শুনছো,
আর মধ্যখানের No Man’s Land টা কাঁদছে,
তারাও কথা বলছে।

Pin It on Pinterest