Rajiul Huda Dipto is a professional screenplay writer and working for years in the Bangladeshi TV industry. Besides that, he introduces himself as a photographer, whose photographs have been featured in various magazines and exhibitions all around the world. Not regularly, but he publishes his works in national dailies as well. Currently, he is working as a community writer in BuzzFeed and a contributor in Getty Images.

 

ছোটবেলায় যখন রাস্তার গর্তে জমে থাকা কাদাগুলোকে দেখতাম, মনে হতো স্কুল যাওয়ার আগে খেয়ে আসা Maltova বা Bournvita কেউ গুলে রেখেছে। একটু চিনি মিশালেই তা খাওয়া যাবে। আর এখন এই রাতে প্রচন্ড শিলা বৃষ্টির যুদ্ধের মাঝে, সেই কাদাগুলো যখন এইদিক ওইদিক ছিটছে সেগুলো দেখে আমার মোটেও ছোট বেলার সেই চিন্তা মাথায় আসছে না। দারুণ পরিমাণে বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টি আপনাকে উপন্যাসিক করতে বাধ্য। কাদা আর শিলার বৃষ্টি বৃষ্টি খেলার মধ্যে ব্যাপক অন্ধকারে একটা কালো রঙ এর AUDI ছুটে যাচ্ছে তুমুল বেগে।

গাড়ির driving seat এ আমি। অবশ্যই গল্প আমি লিখছি, দামী গাড়ি তে বসা আমার অধিকার। আর, পাশে ইয়া বড় পেট নিয়ে বসে আছে আমার সহধর্মিণী। প্রথমত, সে ইয়া বিশাল পেটের অধিকারী হলেও ইয়া স্বাস্থ্যবান নয়। দ্বিতীয়ত, আমরা long drive নামক পুরাতন তত্ত্বে খুব একটা আগ্রহী নই। তাও আবার, যদি তা হয় বৃষ্টির দিনে তবে আমি বাসাতে বসে হালকা হলুদ দিয়ে রান্না করা খিঁচুড়ি খেতে বিশ্বাসী। Long drive এ যেতে নয়। ভুলেও ভাবার কিছু নেই যে, আমি unromantic.

আমার প্রেম অন্য মাপের, তা সবাই একটু দেরী তে বোঝে। যাই হোক, ‘প্রথমত’ এর ব্যাপারটা ভাংছি। আমার স্ত্রীর ইয়া বড় পেটের কারণ, আমি নিজে। সে pregnant. আর ‘দ্বিতীয়ত’, স্বাভাবিকভাবেই খুব একটা filmy way তে এই অহেতুক মেঘ গর্জনের রাত এ তার হেতুক ব্যথা উঠে এবং আমি গাড়ি চালিয়ে তাকে hospital এ নিয়ে যেতে খুব আগ্রহ পোষণ করি। তাই, কাদা আর শিলার বৃষ্টি বৃষ্টি খেলার মধ্যে ব্যাপক অন্ধকারে এই কালো রঙ এর AUDI ছুটে যাচ্ছে তুমুল বেগে।

জীবনে সিনেমার একটু-আধটু ছোঁয়া থাকা ভালো। তার পরিমাণ যদি বেশী হয়ে যায়, তবে তা আর হাসি মুখে নেয়া যায়না। অন্তত, আমার স্ত্রী তো তা এই situation এ নিতেই পারছে না। তার মুখে একটাই dialouge, “ওহ” আর “আহ”। আমার মুখে আর মন্ডলে হাজার খানেক expression চলছে। “জান, এইতো almost there. সামনে ব্রিজটা পার হলেই…..খুব ব্যথা হচ্ছে না?” আমার স্ত্রী’র লাল চোখ আমার দিকে তাকানো, “না না, বাজারের ব্যাগে সাবান নাইতো তাই চিৎকার করছি আমি। জোরে চালাওঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅ।”

আমি নির্বিকার। গাড়ীর speed 110 এর কোলের উপর এসে বসেছে। ওইযে বললাম, filmy ব্যাপারটার মাত্রা খুব একটা বেশি থাকা ভালো না। Ironic ভাবে গাড়ী থামলো। কারণ আর কিছুই না, just ওই টায়ার ফেটেছে। আমার বউ আজকে তার সব দাঁত কড়মড়িয়ে ভেঙে ফেলবে, সেই ব্যাপারে আমি বাজি লাগিয়ে লক্ষপতি হতে পারি। এখন, সে নির্বিকার। না আমি গাড়ির দরজা খুলে টানা একটা দৌড় দিয়ে সংসার এর সকল অসহ্যপণা ত্যাগ করে পালাবো না, বাইরে বেরিয়ে যদি আমি এখন চাকা change করি তাহলে আমার golden সূতোয় সেলাই করা Armani Suit টা ভিজে জানালার গ্রিল মোছা নেকড়া হয়ে যাবে তাই ভেবে যে চাকা পালটাবো না তাও করবো না, বৃষ্টির মাঝে বেশী romantic হয়ে গিয়ে আমার বউয়ের দিকে তাকিয়ে “ওগো তোমাকে না মটু মটু লাগছে” এই কথাটাও বলবো না। আমি বেরিয়ে গিয়ে টায়ার পাল্টাবো।

হ্যাঁ, শিলার একেক টা আঘাত আমার suit এর একেকটা সূতোয় গিয়ে লাগছে। ব্যাপার না। আমি নিচে বসে বসে চাকা পাল্টাচ্ছি। আমার বউয়ের পুরানা dialouge উড়ে উড়ে কানে লাগছে, “জলদি……উফফ,পারিনা জলদি।”

হ্যাঁ, আবার গাড়ি তে উঠে বসেছি। আমি বউ এর পেটে হাত দিতেই গর্জন, “এখন কি তোমার বাচ্চার kick feel করার শখ জেগেছে? আমি মরে গেলাম মা আ আ আ আ আ আ আ আ আ। উফফ পারি না আর। জলদি চলোনায়ায়ায়ায়ায়ায়া।”

গাড়ির speed 110 এর কোঠা এখন পার করলো। আমি আমার বউয়ের মাথায় হাত বুলাচ্ছি আর গাড়ি চালাচ্ছি। থামলো গাড়ি, যাত্রা বাড়ি। আমার বউকে এতোটা শান্ত, যেহেতু আমি কখনো দেখিনি তাই ইচ্ছা করছে moment টা capture করতে। সে শুধু আমার দিকে মাথা ঘুরিয়ে দিলো চিৎকার। “আয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া,মরে গেছি গোওঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅ।”

জ্বি হ্যাঁ, এখন গাড়ির তেল শেষ। But but but, as you know I will be a super dad গাড়ির পিছনের ডিক্কি তে দুইটা তেল এর ডিব্বা already সুন্দরম ভাবে সাজানো আছে। এইবার আমি এই suit খুলে ফেলে দিলাম। এই বৃষ্টির মাঝে নামলে আমার Dubai Imported Rolax টা ভিজে যে সোনালী রঙ এর ব্রেসলেট হয়ে যাবে সেটা নিয়ে আমি ভাবছিনা, Germany imported leather shoe টা কাদার মধ্যে লাফালাফি করে কাদার সাথে প্রথমে প্রেম পরে পরিণয় করে ধনী গরিবের বিয়ের মতো কাদাকে বিয়ে করে ফেলবে তা নিয়েও ভাবছি না, আমার Saudi থেকে আনা পারফিউম বৃষ্টির সাথে আগডুম বাগডুম খেলে হাওয়ায় মিশে যাওয়ার কথাও আমি ভাবছিনা। আমি দৌড়ে পেছনে গেলাম। পেছনে ডিক্কি যেই না উপরে তুলবো, আমার মাথায় আসলো drive seat এর নিচে লুকিয়ে থাকা ডিক্কির lock টাইতো খুলা হয়নাই। আমি আবার যেয়ে gate খুললাম, খুলতেই কানে শব্দ এসে দানা বাঁধলো। “আল্লাহ, আমায় তুলে নাও। এই বাচ্চা তুমি এইখানেই হইয়ে দাও। ওগো, তোমার বাচ্চাকে তুমি সামলে নিয়ো গোওঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅ।”

আমি কান দিলাম না। ডিক্কির lock টা খুলে আবার পেছন এ গেলাম। একটা তেল এর বোতল নিলাম। Filmy way তে ironic ভাবে এখন সেটার মুখ খুলছেনা। আমি আবার গাড়ীর ভেতর এসে মুখ খোলার মহৎ চেষ্টায় লেগে গেলাম। আমার বউ এর মুখ এ আল্লাহ আল্লাহ অব্যাহত আছে। আমি মুখ খোলার চেষ্টা করছি আর ভাবছি, আচ্ছা বোতল এর পুরোটায় গাড়িতে ঢেলে দিবো নাকি হিসেব করে hospital যেতে যতটুকু লাগে ততটুকু দিবো। এমন সময় বউয়ের চিৎকার, “দে,আমাকে তেল দে আমি তেল খাই……উফফ,আম্মুউউউউউ” হঠাত আমার মনে হলো, আমার বউ zombie হয়ে গেছে। তার চুলগুলো সামনের দিকে, খুব বাজে ভাবে নাচছে। সে, দাঁত চিপে আছে।

As you know, she is going to be a super mom আমি তাকে বললাম, “একটু চেষ্টা করে দেখো না সোনা, মুখটা খুলতে পারো কিনা।” সে দাঁত এ চিপে একটা টান দিয়েছে, আর ওমনেই ছিপিটা তালাক দিয়ে দিলো বোতল এর মুখ কে। এতোদিনে বুঝলাম, তার প্রতিদিন দুই বেলা ব্রাশ করা আসলেই একটি কার্যকরী প্রক্রিয়া। আমি খুব excited হয়ে দৌড়ে গিয়ে ট্যাংকিটা খুলে খুলেই বোতল এর তেল ঢালতে লাগলাম। ইসসসসসস! প্রতিবছর এই রাতকে আমি ‘বিপদ রাত্রি’ হিসেবে উদযাপন করবো। এই করিনু পণ, মুই এই করিনু পণ। বিপদ এর কথা খুব একটা বেশি ভাবতে নেই। তা আপনার পা এর নিচ এ এসে দাঁড়ালে আপনার কিচ্ছু করার থাকবেনা, mind it. হঠাত পা এর নিচে চোখ গেলো। আমি চিন্তা করতে করতে সব তেল রাস্তা তেই ঢেলে দিয়েছি। আমি আবার গেটে আসলাম, আবার পিছন টা খুললাম, আর একটা বোতল নিলাম, কতখানি তেল ঢালবো তা নিয়ে আবার ও চিন্তা করলাম, তারপর আমার বউয়ের মুখে বোতল লাগিয়ে ছিপি আবার খুলে দিলাম, তারপর গাড়ীতে এই তেল শান্তির ঢালন ঢেলে দিলাম।

Cause, as you know I will be a…..গাড়ী চালানো আবার শুরু। সাথে সাথে শুরু হলো আমার বউ এর dialouge/প্রলাপ/গালি/চিৎকার। এর সাথে যোগ হয়েছে আমাকে খামচানো। আমারও আর তর সইছেনা। ধুর, গুষ্টি। এবার একটানে hospital যাবো। এতো বেশী ভালো না। আমি তখন দাঁত চিপে গাড়ী চালাচ্ছি। আমার বউয়ের নিশ্চিত দুই-তিন টা সফেদ দাঁত ইতোমধ্যে শাহাদাত বরণ করেছে। সে পাগল হয়ে ঢলে পড়েছে আমার গায়ে। অবশেষে আমি গাড়ি থামালাম।

কোনো hospital এর সামনে না। এইটা একটা toll box. ব্রিজ এ ওঠার আগের সুসজ্জিত toll box. আমি আমার moneybag থেকে credit card টা বের করে দিলাম box এর মধ্যে বসে থাকা কালো চারকোণা ফ্রেমের চশমাওয়ালা লোকটা কে। উনাকে দেখে মনে হলো, আমার চশমাটা পাল্টাতে হবে। যাই হোক, আমার টোল ১২০ টাকা। “একটু জলদি করবেন, প্লিজ,” আমার গুরু গম্ভীর অনুরোধ। যদিও এইখানে অসহায়ের মতো কথাটা বলতে হতো। এখন ওইসব চিন্তার করার পর্যায় এ আমি নেই। আমি আমার বউকে শান্তনা দিতে লাগলাম। “উফফ, কই জলদি করুন।” Box থেকে উত্তর আসলো, “বৃষ্টির জন্য হয়তো network কাজ করছেনা, স্যার।” আমার বউ আবারো সেই দাঁত চিপে আমার দিকে কড়মড়িয়ে তাকালো, আমিও আমার দাঁত চিপে সেই ভদ্র লোকটার দিকে কড়মড়িয়ে তাকালাম। তিনি ভদ্রভাবে card টা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে ফেললেন, “Sorry, Sir.”

আমি আমার মোবাইল টা বের করলাম। ব্যাংক এর পানশে মানের হটলাইন এ call দিলাম। ওইপাশ থেকে একটি মেয়ে বলতে লাগলো, “এক চাপুন, দুই চাপুন।” এই মেয়েটির আওয়াজ অল্প বয়সে শিক্ষক হয়ে যাওয়া আমার স্কুল জীবনের ইংলিশ এর সেই ম্যামটার মতো শুনতে মনে হলো। যাই হোক, এক-দুই চাপাচাপি off. As you know I am going to be a cool dad, আমি আমার শার্ট এর পকেট থেকে ১২০ টাকা সেই ভদ্র লোকের হাতে ধরিয়ে দিলাম। আমার বউ, একান্তে আমার সামনে চিৎকার করলেও মানুষ এর সামনে সে আমার সম্মান বোঝে। তাই সে শান্ত হয়ে আমার কানে এসে বললো, “এই টাকা টা আগে দিলে না কেনো?” আমিও আসতে করে বললাম “আমি AUDI নিয়ে দাঁড়িয়েছি। Card দেখিয়ে ভাব মারতে হবে না?” তারপর, accelerater এ দিলাম এক চাপ। কারণ, জানি এই বাক্য শোনার পর সে আমার সম্মানহানি করবে। কেউ আশে পাশে না থাকাটাই ভালো। চলতে লাগলো আমার গাড়ি, আর আমার বউয়ের ওই সেই একই ধাঁচ এর dialouge.

শিলা বৃষ্টি আরো জোরে শুরু হলো। আমি এখন মুডে আছি। ভাবছি বউকে বলবো কিনা, “এক কাপ চা হলে জমে ক্ষির।” না থাক। বৃষ্টিতে গিটার বাজানোর শখ আমার ছোটবেলার। এই বৃষ্টি দেখে সেই শখ উজবুক আগাছার মতো আবার জেগে উঠেছে। না, সেটাও নাহয় থাক। আমার বউ হয়তোবা এখন ঘুমিয়ে পড়েছে। আমি আসতে করে রেডিও টা ছাড়লাম। বিশ্বাস করুন, ইহা আমার ষড়যন্ত্র নয়। এই শিলা বৃষ্টির রাত এ প্রথম frequency টাতেই শিলা কি জাওয়ানি বেজে উঠলো। আমি বন্ধ করে দিলাম। গাড়ির speed 130 এ। আমার বউ আবার প্রলাপ শুরু করেছে। এখন আবার যুক্ত হয়েছে, “বমি বমি। আমি বমি করবো, আমি বমি করবো।” আমি দাঁড়াও জান বলে seat এর পেছন এ হাত দিয়ে, একটা পলিথিন খুঁজতে লাগলাম। খুঁজতে খুঁজতে পেছন এর seat এ কিছু একটা পেয়ে গেলাম। আমার বউয়ের মুখ এর সামনে ধরতেই সে হরহর করে বমি করে দিলো। তাকে টিস্যু দেয়ার জন্য, যেই না লাইট টা জ্বালিয়েছি ওমনি একটা থাপ্পড় আমার বাম গালে এসে লাগলো। আমার বউ এর চিল্লানি, “আমার imported Gucci bag টার মধ্যে আমাকে কেনো বমি করালি, কুত্তা।”

হ্যাঁ, তার বিকার এর অবস্থা এখন এতোটাই খারাপ যে তুই তোকারি তো খুব ভালো এখন সে dog ই তে ও নেমে এসেছে। আমি এখন এক হাত দিয়ে গাড়ী চালাচ্ছি। আমার অন্য হাত আমার গালের উপর নয়, বরং মুখ এর ভেতর নড়ে যাওয়া দাঁতটা ঠিক করতে ব্যস্ত সময় পার করছে। অবশেষে, আমার গাড়ী থামলো।

হ্যাঁ,এইটা একটা hospital. আমি গাড়ি থেকে নামলাম। দৌড়ে গেলাম বউ এর গেটের দিকে। যেই না তার গেট খুলতে যাবো, তেমনি বিদ্যুৎ চমকে গিয়ে আলো মারলো এই বিদ্যুৎহীন hospital এর ব্যানারের সামনে। আমি দৌড়ে এসে driving seat এ বসে আবার গাড়ীটা start দিলাম। আমার বউ আবার শুরু, “কি করছো। আমাকে নামালে না কেনো। আমি আর পারছিনা যে।” আমার কাঁপুনি ওয়ালা কন্ঠস্বর বলে উঠলো, “বেবি, ওইটা শুধু শুধু hospital না। ওইটা ‘Mental Hospital’. আমার বউ আমাকে আবারো একটা ‘The Godfather’ type এর look দিয়ে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো, “তো, আমাকে ওইখানে নামালি না কেনো। আমার এখন ওইখান এই যাওয়া উচিত। গুষ্টি কিলাই তোর গাড়ীর। থামা গাড়ী,হাইট্টা যামু।” আমি তাকে শান্ত করার এক অহেতুক চেষ্টা করলাম।

গাড়ী এইবার অত্যধিক বেগ ধারণ করেছে। তার সাথে অত্যধিক হারে বেড়েছে, আমার বউয়ের চিৎকার আর খামচানো। তবে, ঠিক উল্টোভাবে কমে গেছে বৃষ্টি। হঠাত করে আমার বউ দেখলো, আমি Central Hospital টা পার করে চলে যাচ্ছি। সে অত্যন্ত অবাক হয়ে আমার দিক এ তাকিয়ে বলতে লাগলো, “এই এই কি করছো। ওইতো ওইখান এ hospital. গাড়ী থামাচ্ছো না কেনো? দাঁড়াও, please আমি আর পারছি না।” আমি নির্বিকার। যত টা জোরে পারছি accelerater চাপছি। সে পাগলের মতো বলছে, “তুমিকি পাগল হয়ে গেছো? থামাও গাড়ি। ওইযে hospital. গাড়ী থামাও।” সে চিৎকার থামাচ্ছে না। আমিও সাথে সাথে চিৎকার দিলাম, “Just shut up now.”

এইবার তার দিকে তাকালাম। বললাম, “আমার পা এর দিক এ তাকাও।” সে কাঁদতে কাঁদতে বললো, “আমি আর পারছিনা সত্যি। গাড়ী hospital এ নিয়ে যাওনা তুমি।” আমি আবার ও বললাম, “আমার পা এর দিক এ তাকাও।”

আমার বউ অসহায় এর মতো তাকালো। আমি বললাম, “আমি এখন ঠিক যত জোরে break টায় চাপ দিয়ে গাড়ীটা থামাবো, ঠিক সেই চাপটা তুমি মনে রাখো।” এই কথা শুনে আমার বউয়ের কান্না আরো দ্বিগুণ বেড়ে গেলো। সে নিশ্চিত, এই স্বামীকে খুন করা ছাড়া আর উপায় নেই।

আমি অসহ্যরকম ভাবে ইংরেজীতে যাকে বলে ‘Abnormal’ ভাবে চাপ দিয়ে গাড়ীটা থামালাম। খুব স্বাভাবিকভাবে গাড়ী টা ঘুরে গিয়ে অবশেষ এ থেমে গেলো। তারপর, চারিদিকে কেয়ামত নিরবতা। আমি গাড়ী থেকে নামলাম। আমার বউ এর দিক এ গিয়ে gate খুলে তাকে বললাম, “আমার দিক এ তাকাও।” সে ভেজা চোখ এ নি:স্বাদ ভাবে আমার দিকে তাকালো। আমি তার seat টা পেছন এ ঠেলে দিয়ে কাত করলাম। তারপর বললাম, “মনে আছেতো আমি break এ কিভাবে চাপ দিয়েছিলাম? এইবার, তোমার পালা সোনা। Just, এক টা চাপ।”

আমার বউকে একসাথে এতোটা অবাক আর অসহায় আমি কখনো দেখিনি। হাজার রকম অনুভূতি সমেত কন্ঠে সে বললো, “Delivery কি তুমি করবা?”

আমি বললাম, “কথা না। Just push.” সে উপরের দিকে তাকিয়ে চোখ টা বন্ধ করে মুখ টিপে চাপ দেয়া শুরু করলো। আর, আমি এইদিকে চিৎকার করা শুরু করলাম, “Do it. You caaaaan dooooo it.”

সে অন্যদিকে চেঁচিয়ে যাচ্ছে, “Nooooooooooo”. এইদিকে আমি, “আর একটু চাপ, সোনা। Just push itttttt nowwwwwwww.” আমার বউ এর গাল দুই দিকে বসে গেছে, “ওহহহহহহ, পারছি না আমিইইইইইইইইইই।”

ওর না পারাটা যেনো আমাকে আরো সাহস দিলো। আমি নির্বিকার ভাবে বললাম, “তোমার জন্য এই পুরো রাতটাই একটা planned surprise. এইবার আমাকে return surprise টা দাও, জান। Please,pusssshhhh.” তার চিৎকার, “ওহহহহহহহহ, nooooo.”

আর আমি, “এইতো এইতো চলে এসেছে। Almost there almost there. আর একটু আর একটু Got it got it got it got it.”

জান্নাতের নিরবতা এই পৃথিবীতে। আর একটা বাচ্চার কান্না, আমার হাতে। গমগম করতে শুরু করলো, আধো আধো সকাল। দিনের প্রথম আলো এসে লাগলো আমার মেয়ের মুখের উপর। আমি দেখলাম, সে মুখ হাঁ করে কান্না করছে। আর, নতুন দিনের আলোর পবিত্রতা শুষে নিচ্ছে তার শরীর। আমার বউ এখন কাঁদছে। অবিশ্বাস্য পরিমাণ সুখ এ। আমি তার হাতে বাচ্চা তুলে দিয়ে পেছন এর ডিক্কি টা আবার খুললাম। And, as you know I will be an awesome dad and যেহেতু এইটা পুরোটাই একটা plan ছিলো তাই আমি প্রস্তুতি সব নিয়েই এসেছিলাম। ডিক্কি তে সব সরঞ্জাম রাখা আছে। আমি stick scissor টা নিয়ে আসলাম। নাড়ী টা কাটা লাগবে। ছোটবেলায় আব্বুর সাথে operation theater এ গিয়ে নাড়ী কাটা দেখার অভিজ্ঞতা কাজে লাগলো। বউ এর মুখ দিয়ে শুধু আওয়াজ বের হলো, “আউচ্চ।”

আমি দেখছি আমার বউ, তার পরের innings শুরু করেছে। তার, মা হবার innings. আমার ব্যাগ থেকে তাকে টাওয়েল দিলাম। সে বাচ্চাটাকে জড়িয়ে নিলো। আমার খুব ইচ্ছা করছে তিন জনকে এক সাথে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে। না থাক, সে না হয় বাসাতে গিয়ে হবে। আমার বউ মেয়ের গাল টা টেনে দেখছে আর হাসছে। ঠিক এইটাই আমি চাইছিলাম। তাকে বললাম, “Surprise টা কেমন লাগলো?” তার মুখে এখন আর ক্লান্তি নেই। সে আমাকে মেয়েকে দেখিয়ে বললো, “আমার তোমাকে দেয়া surprise এর চেয়ে সুন্দর না।”

ভালোভাবে আলো ফুটেছে এখন। আমার গাড়ী একটা টিলার উপর দাঁড়ানো। নিচে সরু এক নদী বইছে। ফাঁকা মাঠ। আমি বউ কে বললাম, “তোমার জায়গাটা মনে পড়ে?” সে এতোক্ষণ জায়গাটা ভালো করে দেখলো। একের পর এক অবাক হতে হতেও সে ক্লান্ত। আমি বললাম, “তোমার আমার প্রাগৈতিহাসিক প্রেম কালের কোনো এক দিন এ এইখানে এসে আমরা আমাদের বাচ্চা-কাচ্চার হাজারটা নাম ঠিক করেছিলাম। কি, মনে নেই?