বাংলাদেশে ‘মোটিভেশনাল স্পিকার’ ব্যাপারটির চর্চা বেশ কিছুদিন আগে থেকে জনপ্রিয় হয়েছে। কিন্তু, সত্যিকার অর্থে এইসব স্পিচ থেকে আমরা ঠিক কতটুকু মোটিভেটেড হয়েছি তা চিন্তার বিষয়।
একটা ইন্সিডেন্ট বলা যাক। একজন খুব নামীদামী মোটিভেশনাল স্পিকারের কাছে আমার পরিচিত কয়েকজন প্রায় বছর খানেক আগে একটা স্যোশাল কাজে উনার কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছিলো। না, অর্থের জন্য নয়। এইখানে বলে রাখা দরকার, উনি আবার একটা অনেক বড় কোম্পানীর বড় এক দায়িত্বে কর্মরত আছেন। উনার সাথে দেখা করে, কনসেপ্ট বোঝানো হলো। বলা হলো, উনি যেনো বিষয়টি একটু প্রোমোট করেন। উলটা উনি, ‘এই কাজে লাভ নাই’ ধরনের মন্তব্য করে তাদেরকে এদিক-সেদিক বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিলেন। ফলাফল, ডিমোটিভেশন। উনার কিছু স্পিচ আমি ইউটিউবে গত কয়েকদিন যাবত ঘাটছিলাম। দুই দিনে প্রায় ১৫-২০ টা ভিডিও দেখে ফেলেছি। হ্যাঁ, ভিডিও’র লেন্থ যতটুকু আমি ততটুকু সময় দারুণভাবে মোটিভেটেড হয়েছি। কিন্তু, তারপর আমার মাথায় তার সেই দিনের ব্যবহারের কথা মাথায় আসে। চট করে মনে হয়, আরে সেতো ফেইক কথা বলে। আর, কিছুনা। তার প্রতিটা ভিডিওতে একটা বিষয় খুব মিলে। তিনি একই বক্তব্য, ঘুরে ফিরে দেন। সব জায়গাতে।
আরো একজন মোটিভেশনাল স্পিকার আছেন, যার কথায় আমি মোটিভেটেড কম বরং ইস্কেয়ার্ড বেশী হয়েছি। উনি চুইংগাম চাবান, আর কথা বলেন। সত্যি বলতে, উনার কথায় আমি কখনো সাহস পাইনি। বরং, হারিয়েছি। কে জানে, ফরমাল ব্যাপারটা আমার সাথে যায় না বলে কিনা।
আবার, এমন কিছু মানুষ আছেন যারা স্বঘোষিত স্পিকার না। কিন্তু, তাদের কথা শুনতে দারুণ লাগে। তারা খুব সিম্পল এবং জীবনের একেকটা দিন থেকে নেয়া কথা বলেন সবসময়। দারুণ শোনায়। ট্রাস্ট মি।
আমি দু:খিত, যদি কেউ ব্যথা পান। আমার ধারণাটা এই রকমই।
একটা দুই-তিন ঘন্টার মোটিভেশনাল সেশন একটা মানুষের হতাশা দূর করতে পারে বা নাও পারে। এক মিনিটের একটা উক্তি বা এক লাইনের একটা লেখাও জীবন পালটে ফেলতে পারে। নট নেশেসারি, আপনাকে মনস্তত্ত্ববিদের কাছে যেতে হবে বা কোনো সেশনকে জয়েন করতে হবে। ইউটিউবে সেইসব ভিডিও যদি জোর করে দেখেন, তাহলে সময় নষ্ট করছেন। আপনার মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে আপনি আপনাকে এপোয়েন্টেড করুন। আপনি, নিজেকে দশ মিনিটের জন্য দুইটা স্নিকার্স বা ক্যাডবেরী (If You Like Chocolates) বেতন দিন। আর, এই দশ মিনিট নিজেকে বোঝান। আমাদের জীবনে অনুপ্রেরণার বিকল্প নেই। কিন্তু, খেয়াল রাখবেন এই লিস্টে যেনো আপনার নিজের নামটাই সব নামের উপরে থাকে।